পরিবারতন্ত্র: পরিবার তান্ত্রিক শাসন ও রাষ্ট্রব্যবস্থা
রাষ্ট্রের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার ক্ষেত্রে পরিবার তন্ত্র এবং রাজতন্ত্র সমর্থক
হলেও আইনি ব্যবস্থাপনার দিক থেকে অনেক পার্থক্য রয়েছে। পৃথকভাবে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায়ও
পরিবারতন্ত্রের একটি অবস্থান সক্রিয় রয়েছে বিশ্বের অনেকগুলো দেশে। রাজতন্ত্র এবং পরিবারতন্ত্রের
মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হল রাজতন্ত্রে রাজার ছেলে বা রাজপরিবার থেকে একজন ধারাবাহিকভাবে
রাজা হয়, এটি আইন ও প্রথাগতভাবে প্রতিষ্ঠিত। আর পরিবারতন্ত্রের ক্ষেত্রে দেখা যায় একটি
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বিভিন্নভাবে আইনের ফাঁক-ফোকর, জনতার মতামত সহ বিভিন্ন কৌশলের
মাধ্যমে রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের উত্তরসূরীরা ধারাবাহিকভাবে রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র
এবং সরকার প্রধান হয়ে যায়। যেমন –
(১) ভারত: ভারত একটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হলেও
দেশটির ক্ষমতা এবং রাজনীতিতে ১৯৪৭ সাল থেকে ছোট-খাট ব্যবতিক্রম ছাড়া নেহেরু পরিবারই
ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দু হয়ে আছে। জওহরলাল নেহেরু ভারতের প্রথম প্রধান মন্ত্রী হন ১৯৪৭
সালে। এবং প্রধান মন্ত্রী হেসেবে তিনি ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত মোট ১৭ বছর ভারতের প্রধান মন্ত্রী
ছিলেন। এর পর নেহেরু কন্যা ইন্দিরা গান্ধী পারিবারিকতন্ত্রের সূত্র ধরেই আসে রাজনীতিতে
এবং দীর্ঘ দিন ভারতের বিকল্পহীন নেত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবং এরই ধারাবাহিকতায়
ইন্দিরা পুত্র সঞ্জয় গান্ধী ও রাজিব গান্ধী আসে ভারতের রাজনীতি ও রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণে।
ভারত রাজনীতির মূল শক্তি কংগ্রেস, বর্তমান কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ রাজিব স্ত্রী সোনিয়া
গান্ধী ও ছেলে রাহুল গান্ধীর হাতে।
(২) বাংলাদেশ:
(৩) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমগ্র বিশ্বের
অবাদ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত হলেও সেখানেও বিরাজ করছে পরিবারতন্ত্র। প্রেসকট
বুশ ১৯৫৩ সাল থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত সিনেটর। তার ছেলে সিনিয়র বুশ ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৩
সাল পর্যন্ত আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এবং সিনিয়র বুশের ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ পারিবারিক
ধারাবাহিকতার সূত্র ধরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন। আমেরিকার আরেক প্রেসিডেন্ট
টানা ৮ বছর আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ছিলেন এখন তার স্ত্রী হিলারি ক্লিনটনও মার্কিন রাজনীতিতে
গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছেন।
এই রাষ্ট্রগুলো ছাড়াও শ্রীলংকায় বন্দর নায়েক পরিবার, পাকিস্তানে ভুট্টো পরিবার,
মালদ্বীপে গাইয়ুম পরিবার, আর্জেন্টিনায় জুয়ান পেরেন পরিবার, ফিলিপাইনে অ্যাকুইনো পরিবার
ও ম্যাকাপাগল পরিবার, ইন্দোনেশিয়ায় কুকার্ণো পরিবার সহ বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশেই
কোনো না কোনোভাবে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পরিবারতন্ত্রের প্রভাব রয়েছে।
No comments:
Post a Comment