Pages

  • কন্ট্রোল প্যানেল
  • সম্পাদক
  • প্রকল্প
  • শিক্ষা
  • ব্যক্তিত্ব
  • ইনকাম
  • ফটো গ্যালারি
  • মতবাদ
  • মোবাইল
  • আমলাতন্ত্র

    আমলাতন্ত্র: আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা-




    আমলাতন্ত্রের ইংরেজি শব্দ হল Bureaucracy। আমলাতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বলতে এমন একধরনের শাসন ব্যবস্থাকে বুঝায় যেখানে একটি রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের জামার ভিতর লুকিয়ে থাকা স্থায়ী একদল সরকারি কর্মকর্তা, যারা নির্বাচিত নেতাদের হাত মুখ ব্যবহার করে রাষ্ট্রের সকল শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা  করে। সমগ্র বিশ্বে এটি একটি অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়ার তৃতীয় শক্তির শাসন ব্যবস্থা। এই শাসন ব্যবস্থায়  আমলারা সকল ধরা-ছুয়ার বাহিরে অদৃশ্য থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। স্বাভাবিকভাবে আমলারা জন প্রতিনিধি নয় বা ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিতও নয়। রাজনৈতিকভাবে দলীয় সরকারের পরিবর্তন হলেও আমলাতন্ত্র কায়েম থাকে। যার ফলে দেখা যায় দলীয় সরকার পরিবর্তন হলেও দেশের শাসন ব্যবস্থার মৌলিক কোনো পরিবর্তন সাধিত হয় না অর্থাৎ সরকার পরিবর্তন হলেও শাসন ব্যবস্থা একই থাকে, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কিছু দলীয় ব্যক্তির নাম জনতার মুখে মুখে ধ্বনীত হয়। এর আসল কারণ মূল শাসন ব্যবস্থাটির নিয়ন্ত্রণ থাকে আমলাদের হাতে।
    আমলা হচ্ছে সরকারের একটি স্থায়ী অংশ যারা অনির্বাচিত। আমলাদের রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারক ও ব্যবস্থা তৈরিকারক হিসেবেও অখ্যা দেওয়া হয়ে থাকে। ঐতিহাসিক এবং ধারাবাহিকভাবে আমলারা রাষ্ট্র ও সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালন ব্যবস্থার সাথে সম্পৃক্ত থাকার ফলে, তাদের অভিজ্ঞতা থাকে অনেক বেশি। বর্তমান সময়ে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রই কম বেশি আমলাদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। নির্বাচিত জন প্রতিনিধিদের পক্ষে আমলাদের শাসনকে নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও জটিল বিষয়। কারণ রাজনৈতিক দলের নেতারা নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য ক্ষমতা প্রাপ্ত হন, তারা নিজেরা এই বিষয়ে কম অভিজ্ঞতা এবং দলীয় ভাবমূর্তি বজায় রাখার কারণে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমলাদের বিরুদ্ধে যাওয়ার উদ্যোগ নিতে সাহস পান না।
    ভারতবর্ষের আমলাতন্ত্র:  ভারতবর্ষে কোম্পানি শাসনের প্রথমদিকে সরকার পুরাতন আমলাদের
    সহায়তায় শাসন কার্য পরিচালনার চেষ্টা করে। রবার্ট ক্লাইভ তার শাসন ব্যবস্থায় পূর্বের সকল আমলাদের যার যার অবস্থানে বহাল রাখে। পরে ওয়ারেন হেষ্টিংস আমলাতন্ত্রের মাঝে উচ্চ পদে ইউরোপীয়দের সংখ্যাধিক্য নিশ্চিত করে। তখন থেকে ভারতবর্ষের আমলাতন্ত্র হয় দেশি-বিদেশী আলমাদের সংমিশ্রণের সমাহার। এইভাবেই বৃটিশদের আধিপত্য বৃদ্ধির মধ্যদিয়েই আমলাতান্ত্রিক ভারতবর্ষের শাসন চলতে থাকে। বৃটিশ নির্মিত বিভিন্ন পদ্ধতি এবং কৌশলের অধীনে ভারতবর্ষ প্রায় ২০০ বছর চলার পাশাপাশি এই উপ-মহাদেশের মানুষ বৃটিশ শাসনে অবস্থ হয়ে পড়ে। ফলে ১৯৪৭ সালে বৃটিশ বিদায় নিলেও বৃটিশ দ্বারা গঠিত আমলাদের আধিপত্য ও শাসন কাঠামো রয়ে যায়। তখন থেকে ভারতে - একটি অভিজাত আমলা শ্রেণি কর্তৃক ‘ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্টেটিভ সার্ভিস’ এবং পাকিস্তানে- একইভাবে (সিএসপি) ‘সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান’ দেশ ও শাসন পরিচালনায় নিয়োজিত থাকে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর –সিএসপি-নাম পরিবর্তন করে গড়ে ওঠে
    ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস” (বিসিএস)। বিশ্বের সকল দেশেই আমলারা নীতি নির্ধারন ও প্রশাসনিক কাঠামোয় নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করে আসছে। স্বাভাবিকভাবে আমলারা নীতি নির্ধারনী ও প্রশাসনিক দিক দিয়ে হয় অনেক অভিজ্ঞ। ফলে এই সুসংগঠিত, সুযোগ্য, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, উচ্চ শিক্ষিত ও অভিজ্ঞ আমলাদের সাথে রাষ্ট্রের শাসন পরিচালনা ও অভ্যন্তরিন নানামুখী প্রক্রিয়া সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারনাহীন ও নির্দিষ্ট সময়ের শর্তে শাসনকার্য পরিচালনার দায়িত্বে বসা রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক সব সময়েই হয় দ্বন্দ্বময়। তাই রাজনৈতিক নেতাদেরকে বাহির  থেকে ফিট-ফাট দেখাগেলেও শাসন কাঠামোর ভিতরে তারা সদর ঘাট। অর্থাৎ অনেকটাই থাকে নিয়ন্ত্রণহীন, সামরিক বা বেসামরিক আমলাদের অধীন। 

    1 comment:

    1. চিন্তা করে এই সুন্দর আর্র্টিকেল লেখার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ

      ReplyDelete